কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
পৃথিবীতে যত প্রজাতির বাদাম পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় এবং পরিচিত বাদাম হচ্ছে কাঠ বাদাম। ইংরেজীতে এটি Almond নামে পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Prunus dulcis. কাঠ বাদাম মূলত Combretaceae পরিবারের লেডউড জাতীয় বৃক্ষের ফলের বীজ। এই গাছের পরিপক্ক ফলের ভেতরে ৩ থেকে ৪ টি বীজ থাকে যা সরাসরি বা ভেজে খাওয়া যায়।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
- ভূমিকা
- কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম
- কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- সবশেষে
কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়মঃ
কাঠ বাদাম কাঁচা, গুড়ো করে, ভেজে বা ভিজিয়ে খাওয়া যায়। নিচে এ নিয়মগুলি নিয়ে
বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
১. কাঁচাঃ
কাঠ বাদাম কাঁচা খাওয়া সবচেয়ে সহজ। এতে করে
বাদামের স্বাদ পুরোপুরি পাওয়া যায়। তবে কাঠ বাদাম কাঁচা খেলে অনেক সময় পেটের সমস্যা হয়।
২. গুড়ো করেঃ
কাঠ বাদাম খাবার আরেকটি উপায় হচ্ছে শুকনো কাঠ বাদাম গুড়ো করে সরাসরি বা অন্যান্য
খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া। এভাবে অন্যান্য বাদাম এর সাথে মিশিয়ে মিক্সড নাট বা
মিক্সড ফুড হিসেবে খাওয়া যায়। আবার দুধ বা মধুর সাথে মিশিয়েও খাওয়া যায়।
৩. ভেজে নিয়েঃ
কাঠ বাদাম শুকনো করে বা অল্প তেলে ভেজেও খাওয়া যায়। এতে স্বাদ বেড়ে যায় বহুগুনে।
৪. ভিজিয়ে রেখেঃ
বিশেষজ্ঞরা সবসময়ই কাঠ বাদাম ভিজিয়ে খাবার
পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যেহেতু কাঠ বাদাম বেশ শক্ত খাবার তাই এটি ভিজিয়ে খেলে হজমে
সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঠ বাদাম ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে খোসা
ছাড়িয়ে খেতে হবে। এতে করে কাঠবাদামের ফাইটিক এসিড বা ট্যানিন অপসারিত হয়,
যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
আরও পড়ুনঃ পেস্তা বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
কাঠবাদাম এমনভাবে ভিজিয়ে রাখতে হবে যেন এর উপরে আধ ইঞ্চি পানি থাকে। এভাবে
সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খোসা ছাড়িয়ে খেতে হবে।
কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
কাঠবাদামে রয়েছে আঁশ, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন
ই,
ম্যাঙ্গানিজ,
ভিটামিন
বি-২,
ফসফরাস
এবং
ম্যাগনেসিয়াম। এর সবগুলিই শরীরের জন্য ভীষন উপকারি। নিচে কাঠবাদামের উপকারিতা সমূহ আলোচনা করা হলোঃ
১. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিঃ
ভেজানো কাঠ বাদাম খেলে মস্তিষ্কের
কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে থাকা রিবোফ্লাভিন এবং বিভিন্ন উপাদান
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি করে।
এলোভেরা এর উপকারিতা ও ব্যাবহার
২. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিঃ
কাঠবাদামে রয়েছে ভিটামিন ই এবং এন্টি-অক্সিডেন্ট, এগুলো ত্বকের
বলিরেখা এবং ঝুলে পড়ার জন্য দায়ী ফ্রি র্যাডিক্যালস গুলো নিয়ন্ত্রণ করে।
৩.চুলের বৃদ্ধিতেঃ
চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য দরকার প্রচুর
ম্যাগনেসিয়াম। কাঠবাদামে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়, যা চুলের গোড়া শক্ত করে এবং চুলের
স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
৪.রক্তশূন্যতার চিকিৎসায়ঃ
কাঠবাদামে
রয়েছে প্রচুর আয়রন, তামা এবং ভিটামিন সহ অন্যান্য খনিজ। এগুলো রক্তের লোহিত
রক্ত কনিকার সংখ্যা বাড়ায় এবং অক্সিজেন পরিবহন ক্ষমতা বাড়িয়ে রক্তশূন্যতার উপশম
করে।
৫. চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ
কাঠবাদামে রয়েছে ভিটামিন এ, ই এবং
অন্যান্য খনিজ যা অপটিক্যাল নার্ভ এর জন্য বিশেষ উপকারি। ফলে
পরিমিত কাঠবাদাম গ্রহণ চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
৬.রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ
কাঠবাদামে থাকা ফসফরাস এবং সোডিয়াম রক্তচাপের
ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ করে। রক্তচাপের অনিয়মিত ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ এর জন্য
কাঠবাদাম খুবই উপকারি।
আরও পড়ুনঃ হলুদ এর ব্যাবহার ও উপকারিতা
৭. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ
কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর ফাইবার। এই ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে বিশেষ সহায়ক। সকালে
খালি পেটে ভেজান কাঠবাদাম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
৮.ওজন নিয়ন্ত্রন করেঃ
কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর আঁশ এবং স্বল্প
কার্বোহাইড্রেট। ফলে এটি খেলে পেট ভরে এবং ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে।
সবশেষে ঃ কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
আমাদের আজকের আর্টিকেলের বিষয়বস্তু ছিলো কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
নিয়ে। আশা করি, আর্টিকেলটি থেকে নতুন অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি
থেকে যদি নতুন কিছু জানতে পেরে থাকেন এবং আপনাদের কাজে লেগে থাকে তবে আমাদের
পরিশ্রম স্বার্থক হবে। যদি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে শেয়ার করুন
আপনাদের ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url