বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প হচ্ছে মুহুরি সেচ প্রকল্প। এছাড়াও
এখানে রয়েছে দেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুত প্রকল্প। আমাদের আজকের পোস্টের আলোচ্য
বিষয় হচ্ছে এই মুহুরি সেচ প্রকল্প। এই পোস্ট পড়লে আমরা জানতে পারবো মুহুরি সেচ
প্রকল্প কোথায় অবস্থিত এবং এর গুরুত্ব।
আমাদের আজকের পোস্ট পড়লে জানতে পারবেন মুহুরি সেচ প্রকল্প কোথায় অবস্থিত, কেন
বিখ্যাত, থাকার জায়গা এবং এখানে যাবার উপায় সম্পর্কে। তাই মুহুরি সেচ
প্রকল্প এর এসব তথ্য সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
মুহুরি সেচ প্রকল্প কোথায় অবস্থিত
বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের জেলা ফেনীর সোনাগাজি উপজেলায় মুহুরি সেচ প্রকল্প অবস্থিত।সোনাগাজী উপজেলা সদর থেকে এ প্রকল্পের কিছু অংশ চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায়
পরেছে। ফেনী নদী, মুহুরি নদী এবং কালিদাস নদীর সম্মিলিত প্রবাহকে স্লুইস
গেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করে মুহুরি সেচ প্রকল্প তৈরী করা হয়েছে।
মুহুরি সেচ প্রকল্প কেন বিখ্যত
ফেনি ও মুহুরি নদীর দুই পাড়ের জমিকে সেচের আওতায় আনতে ১৯৭৭-৭৮ সালে এ
প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। মুহুরি সেচ প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ১৯৮৫-৮৬ সালের দিকে।
মুহুরি সেচ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল এসকল এলাকার চাষযোগ্য জমিকে সেচের
আওতায় আনা এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ।
এসবের পাশাপাশি এটি ভ্রমন স্থান হিসেবে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। শীত মৌসুমে এটি
পর্যটকদের আগমনে মুখর হয়ে উঠে।
১.পর্যটন কেন্দ্রঃ
মুহুরি সেচ প্রকল্পের চারদিকে তৈরী হয়েছে বিনোদন কেন্দ্র এবং পিকনিক স্পট।
সারাদেশ থেকেই মুহুরি সেচ প্রকল্পে মানুষ বেড়াতে আসে। মুহুরি সেচ প্রকল্পের
চারদিকে করা কৃত্রিম বনায়ন, এর জলরাশি পর্যটকদের আকর্ষন করে।
২. বায়ুবিদ্যুত কেন্দ্রঃ মুহুরি সেচ প্রকল্পে ২০০৪ সালে ২২৫ কিলোওয়াট
ক্ষমতা সম্পন্ন চারটি উইন্ডমিল বা বায়ুবিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এটি
বাংলাদেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুত কেন্দ্র।
৩. মুহুরি রেগুলেটরঃ সেচ কাজ এবং বন্যা নিয়ন্ত্রনের জন্য রয়েছে ৪০ টি গেট
বিশিষ্ট বাঁধ বা রেগুলেটর। এটি অন্যতম বিখ্যাত পর্যটন আকর্ষন।
৪. পাখিঃ মুহুরি সেচ প্রকল্পের লেক এবং এর আশপাশের গাছে প্রায় ৫০
জাতের পাখি ও হাঁস দেখা যায়। এছাড়া শীতের সময় অতিথি পাখিরাও ভীড় করে এখানে।
৫. মাছের অভয়াশ্রমঃ মুহুরি সেচ প্রকল্পের লেকে মাছের অভয়াশ্রম তৈরী
করা হয়েছে। ফলে এখানে প্রচুর পরিমানে মাছের উৎপাদন ও আহরন করা সম্ভব হচ্ছে।
এছাড়া মুহুরী নদীতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভাসমান মাছ চাষ, নদীতে জাল ফেলে জেলেদের মাছ
ধরার দৃশ্য, পরিকল্পিতভাবে মাছ চাষ, ডেইরি ফার্ম, ব্যক্তিগত পর্যায়ে নার্সারি ও
কৃষি খামার পর্যটকদের আকর্ষন করে
মুহুরি সেচ প্রকল্প এলাকায় যাবার উপায়
মুহুরি সেচ প্রকল্প এলাকায় যাবার দুইটি সহজ উপায় রয়েছে, এগুলি হচ্ছেঃ
১) ফেনী লালপোল এলাকা হতে বা্সে সোনাগাজী উপজেলা সদর পর্যন্ত তারপর সোনাগাজী উপজেলা সদর হতে বাস যোগে বাদামতলী পর্যন্ত, এরপর বাদামতলী হতে রিক্সা যোগে মুহুরি সেচ প্রকল্প এলাকায় পৌঁছান যায়।
২) ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা সদর থেকে সিএনজি অটোরিক্সা যোগে সরাসরি মুহুরি সেচ প্রকল্প এলাকায় যাওয়া যায়।
মুহুরি সেচ প্রকল্প এলাকায় থাকার জায়গা
মুহুরি সেচ প্রকল্প এলাকার কাছেই রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্টহাউজ। এছাড়া সোনাগাজী উপজেলা সদরে রয়েছে সরকারি ডাকবাংলো। আর ফেনী জেলা সদর এবং সোনাগাজী উপজেলা সদরে রয়েছে বেশ কিছু মধ্যম মানের আবাসিক হোটেল।
শেষ কথাঃ মুহুরি সেচ প্রকল্প
আমাদেরআজকেরআলোচনারবিষয়ছিলোমুহুরি সেচ প্রকল্প নিয়ে।আমাদেরআর্টিকেলটিযদিআপনাদেরভালোলেগেথাকেতবেশেয়ারকরুনআপনাদেরসামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আর্টিকেলটি যদি আপনাদের উপকারে আসে তবে আমাদের পরিশ্রম
স্বার্থক হবে।আপনাদেরমূল্যবানমতামতজানানকমেন্টসেকশনে। আর নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের সাইটটি নিয়মিত ভিজিট
করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url